মার্কিন কারাগার থেকে এক হতভাগী মুসলিম ড. আফিয়া সিদ্দীকীর চিঠিঃ

লিখেছেন লিখেছেন হাসিবুর হাসান ২০ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:৫৪:২০ রাত

মার্কিন কারাগার থেকে ড.

আফিয়া সিদ্দীকীর চিঠিঃ

আফিয়া সিদ্দিকী সম্প্ররকে জানে না এমন খুব কম লোকই আমার লিখাটা পরবে। কিন্তু বাস্তবতা হল এদেশের ৯৫% লোকই তার নামটাও শুনেনি।

আমি সেই আফিয়ার কথা বলছি যে তোমার আমার এক নির্যাতিতা মুসলিম বোন। আসলে বোন বলাটা কি ঠিক হল? তাকে বোন বলার যোগ্যতা কি আমাদের আছে? প্রশ্নটা থেকেই যায়।

যারা জানেন না তাদের জন্য এই মহতী নারী সম্পর্কে কিছু বলে নিই।

ড. আফিয়া সিদ্দিকী

তিনি পাকিস্থানী মহিলা,

যিনি পি, এইচ-ডি ডিগ্রীর

অধিকারিনী।

যাঁর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের,

১৪৪টি অনারারী ডিগ্রী ও

সার্টিফিকেট রয়েছে।

তিনি পৃথিবীর একমাত্র পি, এইচ-

ডি ডিগ্রীধারী নিউরোলজিষ্ট।

তিনি হাভার্ড ইউনিভার্সিটির

সর্বোচ্চ সম্মানিত ডিগ্রীর

অধিকারিনী।

তিনি একজন হাফেজে কোরআন।

তিনি একজন নামকরা আলেমে দ্বীন।

পাকিস্তানী পত্রিকা দ্যা নেশন এর

খবর গুলো দেখুন..--..

Aafia Siddiqui contracts cancer in US jail (January

22, 2012)

Aafia Siddiqui's family says death threats received

( August 05, 2008)

আফিয়া সিদ্ধিকি গ্রাজুয়েশন

করেছিলেন Massachusetts institute of

Technology, Uk থেকে এবং PHD

করেছিলেন Brandis unversity, US থেকে।

২০০৩ সালে FBI তাকে কিডন্যাপ

করেছিল

এবং তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো

আফগানিস্থানের বাগ্রাম জেলে।

জেলে তাকে রাখা হয়েছিলো

পুরুষদের সাথে যেখানে ছিল

না আলাদা কোন বাথরুমএর ব্যাবস্থা।

আমেরিকান সৈন্যরা তাকে যত রকম

উপায়ে সম্ভব নির্যাতন করেছিলে।

দিনে তাকে কয়েক বার ধর্ষন করা হত।

তাকে উলঙ্গ থাকতে বাধ্য করা হত।

এবং তাকে বলা হত কুরআনে পাকের

উপর দিয়া হেটে যাবার জন্য তার

কাপড় ফিরে পাবার জন্য

(নাউজুবিল্লাহ)। ২০১০ সালের

ফেব্রুয়ারীতে তাকে একপেশে

বিচারের

মাধ্যমে সাজা দেওয়া হয়েছিল ৮৬

বছর সস্রম কারাদন্ড যা ছিল

মানবিকতার উপর চরম অন্যায়। এটা ছিল

পুরোপুরি অন্যায়

এবং একতরফা সিদ্ধান্ত।

৫ বছর পর তার তিন সন্তান্দের মধ্যে বড়

ছেলে ১১ বছর বয়সী আহমাদ

সিদ্ধিকীকে মুক্তি দেয় হয় ২০০৮

সালে যাকেও গ্রেফতার

করা হয়েছিল তার মায়ের সাথে ২০০৩

সালে। তার ছোট দুই সন্তানের

কথা কেউ জানে না।

অনেকে বলে থাকে যে তাদেরকে

মেরে ফেলা হয়েছে। আফিয়া তখনও

FBI এর কাস্টাডিতে। যখন তার বিচার

চলছিল তখন তার স্ট্যাটমেন্ট জাজের

উদ্দেশ্যে-

আপনি তাদের কে ক্ষমতা দিয়েছেন

আমাকে রেপ করার, আমাকে উলঙ্গ

করে সার্চ করার। আমি তো সেদিন ই

মরে গিয়েছি যেদিন আমাকে প্রথম

ধর্ষন করা হয়েছিলো এবং উলঙ্গ

করে সার্চ করা হয়েছিলো।

আমাকে ছেড়ে দিন আমাকে আমার

দেশে যেতে দিন।

এই পাকিস্তানী বিজ্ঞানী যখন us

prison cell এ ৮৬ বছরের কারাদণ্ড ভোগ

করছিলেন তখন

তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন

এবং একই সময়ে তার বন্ধী জীবদ্দশায়

যৌন নির্যাতনের মাধ্যমে প্রেগনেন্ট

করার অভি্যোগ রয়ছে।

তাকে গ্রফতার করার আগে FBI তার

বিরুদ্ধে কিছু সাজানো নাটক মঞ্চস্থ

করছিলো। অন্য কোনো দিন

তা বলবো ইনশাহ্ আল্লাহ। শুধু এইটুকু

বলবো তার উপর যে নির্যাতন,

অত্যাচার করা হয়েছিলো, তার

বিরুদ্ধে প্রতিবাদ

ছিলো সে হিসাবে খুব-ই নগন্য। খোদ

পাকি সরকারেই FBI

কে সহায়তা করাছিল

তাকে কিডন্যাপ করতে। ডঃ আফিয়ার

উপর নির্যাতন এবং মুসলিম বিশ্বের মুখ

বন্ধ করে রাখা, মুসলিমদের জন্য

একটি কলঙ্কজনক অধ্যায় হয়ে থাকবে।

এবার তার চিঠিটা দেখুন। যে চিঠি পড়ে চোখের

পানি ধরে রাখতে পারিনি.................

.......

----------------------------------------------

-

আমার বন্দী জীবনের

প্রতিটি মুহূর্তে দুয়া করি আমার ভাই

সেই মুহাম্মদ বিন কাশিমের জন্য।

আমি সারা বিশ্বের জনসংখার এক

পঞ্চমাংশ জনসংখার মুসলিমদের বোন।

এই মুহূর্তে আমি নিজে নিজে হাটতে

পারি না।আমার একটি কিডনি বের

করে ফেলা হয়েছে,আমার

বুকে গুলিবিদ্ধ

করা হয়েছে এবং আমার বুকে গুলির

আঘাত রয়েছে। হে আমার ঘুমন্ত/মৃত

জাতি”। আমার নাম ড.

আফিয়া সিদ্দিকি ,আমি Massachusetts

Institute of Technology (USA)

থেকে লেখাপড়া শেষ

করেছি্ এবং আমার

তিনটি বাচ্চা আছে।আমার উদ্দেশ্য

ছিল আপনাদের সহায়তায় অর্জিত

আমার উচ্চ শিক্ষার মাধ্যমে আমার

জাতিকে সাহায্য করা।

আমাকে অপহরন করা হয় আমার নিজের

দেশ [পাকিস্তান] থেকে আমার

দেশের তথাকথিত মুসলিম

নামধারি মুরতাদ সেনাবাহিনীর

দ্বারা এবং আমায়

বিক্রি করে দেয়া হয় আমেরিকার

কাছে।

এরপর তারা আমার উপর চালায়

পাশবিক অত্যাচার।

আমাকে নির্দয়ভাবে নির্যাতন

করা হয়, আঘাত করা হয় এবং ধর্ষন

করা হয়, একের পর এক।আমার কয়েদী নম্বর

দেয়া হয়েছে ৬৫০। আমি এখন মুসলিম

দেশ আফগানেস্তান এর কারাগার

থেকে আমার বন্দী জীবনের

প্রতিটি মুহূর্তে দুয়া করি আমার ভাই

সেই মুহাম্মদ বিন কাশিমের জন্য।

আমি সারা বিশ্বের জনসংখার এক

পঞ্চমাংশ জনসংখার মুসলিমদের বোন।

ইসলামের শুরু থেকেই আমার

জাতি ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত

তাদের ভাইদেরকে হেফাযত করার

জন্য এবং শত্রুর কবল

থেকে তাদেরকে রক্ষা করার জন্য।

হাযরত উমার[রা] বলেছিলেন

যে,”যদি কোন কুকুর ফুরাত নদীর

ধারে মরে থাকে,তাহলে শেষ

বিচারের দিন উমর সেই কুকুরের মৃত্যুর

জন্য আল্লাহ’র নিকট দায়ী থাকবে।।”

এই মুহূর্তে আমি নিজে নিজে হাটতে

পারি না।আমার একটি কিডনি বের

করে ফেলা হয়েছে,আমার

বুকে গুলিবিদ্ধ

করা হয়েছে এবং আমার বুকে গুলির

আঘাত রয়েছে। আমার জন্য সব ধরনের

মেডিক্যাল এবং বৈধ ও সাধারন

সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাখান

করা হয়েছে এবং এটা নিশ্চীত নয়

যে আমি বেচে থাকব

না মরে যাবো।।আমি তোমাদের জন্য

বোন হওয়ার যে মর্যাদা তার রদ চাই।

আমি একজন গর্বিত মুসলিম,হযরত

মুহাম্মাদ (সঃ) এর অনুসারি, হযরত আবু

বক্কর[রা], উমার[রা] , উসমান [রা],

আলি[রা], এবং তার সকল সাহাবী ও

তার সকল সঠিক ও

সত্যপন্তি অনুসারীদের কণ্যা।

আমি তোমাদের বোন হতে চাই না।

আমার নবী (সাঃ)এবং হযরত আবু বক্কর

[রা], উমার[রা] , উসমান [রা], আলি[রা],

এবং তার সকল সাহাবী ও তার সকল

সঠিক ও সত্যপন্তি অনুসারীরাই আমার

উদ্ধারকারী এবং আমি আল্লাহর

করুণা ও সাহায্য চাই তোমাদের

কাছে নয়।

আমি কোনো পাকিস্তানি হতে চাই

না যাদের রয়েছে ৬ লক্ষ

সৈন্যবাহিনী, বিশেষ ফোর্স

এস,এস,জি কিন্তু

তারা আমাকে রক্ষা করতে ব্যার্থ

হয়েছে। তারা আমাকে রক্ষা করার

প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কিন্তু যখন

আমি সাহায্যের জন্য তাদের

দিকে তাকিয়ে থাকলাম তখন

তারা আমাকে প্রত্যাখান করল।

আমার সেই মুসলিম উম্মাহ

বলে ডাকা লোকদের রয়েছে লক্ষ লক্ষ

সৈন্যবাহিনী সব ধরনের টাঙ্ক,

বন্দুক,জঙ্গি বিমান,সাবমেরিন কিন্তু

তারা এখন পর্যন্ত আমাকে উদ্ধার

করতে এবং বাচাতে পারেনি।

কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে জবাব

দেয়ার ব্যাপারে তোমাদের চিন্তার

কিছু নেই কারন তোমাদেরকে এ

বিষয়ে কোনো প্রশ্নও

করা হবে না এবং তোমাদেরকে

কোনো উত্তরও দেয়া লাগবে না এজন্য

যে তোমরা কেউ মুসলিম

হিসাবে আমার ভাই নও,

এবং ইসলামধর্মের জন্য ও ইসলামের

অন্তর্ভুক্তির জন্য আমার ভাই নও।

তোমরা কেউ আরব, কেউ ইরানী, কেউ

ফিলিস্তীনি কেউ আফ্রিকান, কেউ

পাকিস্তানি, কেউ বাংলাদেশী,

কেউ আফ্রিকান, কেউ মালোয়শিয়ান

কেউ ইন্দোনেশিয়ান, কেউ দক্ষিন

এশীয় হতে পারো, তবে তোমরা কেউ

মুসলিম নও।আমার কথায়

যদি তোমরা আঘাত পেয়ে থাক

তাহলে আমি খুবই দুঃখিত কিন্তু

তোমরা কেউ এটা চিন্তাও

করতে পারবে না যে, আমি কী ধরনের,

এবং কেমন আঘাতপ্রা্প্ত।

[ড.আফিয়া সিদ্দিকি......]

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে তিনি পরলোকগমণ

করেছেন। হে আল্লাহ তুমি বোন

আফিয়াকে জান্নাতুল ফেরদাউস

নসীব করো। হে বোন তুমি আমাদের মত

অধমদের ক্ষমা করে দিয়ো। যদিও নিজেকে নিজেই ক্ষমা করতে পারব না।

বিষয়: বিবিধ

২৭৮৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

210909
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:২২
মেঘ ভাঙা রোদ লিখেছেন : এত বড় একটা মেধাবিনী মুখের এই অবস্থা আজ। হায় সেলুকাস পৃথিবী। তোমার জন্য পৃথিবী নয়।
210913
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৩১
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : অনেক বার পড়েছি আবার পড়ে ভালো লাগলো
210917
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১০:৪৩
মোঃজুলফিকার আলী লিখেছেন : অনেক দুঃখ জনক ও ন্যাককার জনক ঘটনার শিকার ডঃ আফিফা সিদ্দিকি। আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করুন। আমীন।
210929
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:১৯
নাবীল লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ।গুরুত্ব পূর্ণ একটি তথ্য দেওয়ার জন্য।
যুগে যুগে নাস্তিক্ক বাদের দালাল মুনাফিক সরকার গুলুই মুসলমান দের বেশি ক্ষতি কেছে।
খুব কষ্ট লাগলো।
210939
২০ এপ্রিল ২০১৪ রাত ১১:৩৫
শুভ্র আহমেদ লিখেছেন : ইস!! তিনি বেচে থাকলে হয়তো আমরা মুসলিমরা একটু গর্ব করতে পারতাম, তাছাড়া তাকে দিয়ে সম্ভাবনা ছিলো।

এরকম আরো আছে, এসবই মুসলমানদের তাদের গন্তব্যে নিয়ে যাচ্ছে, আমরা আছাড় খাচ্ছি, এক সময় ঠিকই উঠে দাঁড়াব। ইনশাআল্লাহ
210990
২১ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০২:৪৭
হাসিবুর হাসান লিখেছেন : আসলে আমাদের কাপুরুষতার কারণেই তার মত মহীয়সী নারীরা অকালে ঝরে যাচ্ছে। এ জন্য আমরাই দায়ী।

হাশরের মাঠে নিজেকে মুসিলিম বলে পরিচয় দিতে পারব কিনা জানিনা। :'(

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File